আমার বয়স 25, আমি অল্প বয়সের একজন বিধবাকে বিবাহ করেছি সে তার মৃত স্বমীকে ভূলতে পারছেনা আমি এখন কী করতে পারি?

আমার বয়স 25, আমি অল্প বয়সের এক জন বিধবাকে বিবাহ করেছি। সে তার মৃত স্বমীকে ভূলতে পারছেনা আমি এখন কী করতে পারি?

এটা খুবই ব্যাতিক্রমী একটি সমস্যা। তাই, আশেপাশে মানুষের কাছ থেকে এ ব্যাপারে পরামর্শ পাওয়া কস্টকর। তাছাড়া, কেউ কোন পরামর্শ দিলে, সেটা আপনার কাছে হাস্যকর মনে হবে। আমার পরামর্শটাও আপনার হাস্যকর মনে হবে।

প্রথমে নারী ও পুরুষের ভালোবাসার পার্থক্য বুঝতে হবে। পুরুষের জন্য ভালোবাসা একটি অধ্যায়। আপনি একজন স্কুল ছাত্র, কলেজ ছাত্র, একজন চাকুরীজীবী, একজন অবসরপ্রাপ্ত। এভাবে জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়ে, আপনার বিভিন্ন পরিচয় হয়। এভাবেই জীবনের একটি অধ্যায়ে আপনি প্রেমিক/স্বামী। কিন্তু নারীর জন্য ভালোবাসা হলো, তার মুল পরিচয়, সেটা তার সাথে সবখানে থাকে। ভালোবাসা নারীর জন্য কোন একটি অধ্যায় নয়। ভালোবাসা তার পরিচিতি বা অস্তিত্বেরই একটি অংশ।

biye

সেজন্যই, নারী যখন কাউকে ভালোবাসে, তখন তাকে সবখানে ছড়িয়ে ফেলে। বই পড়তে গেলে মনে পরে, তার প্রেমিক/স্বামী ওই বই পছন্দ করতো। সিনেমা দেখলে মনে পরে, প্রেমিক/স্বামী ওটা বলতো। রান্না করলে মনে পরে, প্রেমিক/স্বামী অমুক খাবার খেতো। অর্থাৎ, নারীর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তার পছন্দের পুরুষ ছড়িয়ে থাকে। এজন্যই নারীর জন্য তাকে ভোলা কস্টকর।

নারীকে মন থেকে পূর্ববর্তী পুরুষের স্মৃতি ভোলানো যায় না। তবে, তার মনে নতুন পুরুষের অস্তিত্ব ঢুকিয়ে দেওয়া যায়। সেটা করতে পারলে, পূর্ববর্তী স্মৃতি কোন সমস্যা করে না

আপনার ক্ষেত্রে যে সমস্যাটা হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যার্থতা। আপনার স্ত্রীর মনে আপনি নিজের অবস্থান তৈরি করতে পারেন নি। তাই তিনি পূর্বের স্বামীর কথা মনে করার সুযোগ পাচ্ছেন। তার মনে এমনভাবে জায়গা করে নিন, যাতে শুধু আপনাকে মনে করে, আপনাকেই ভালোবাসে।

কিভাবে তার মনে পোক্ত জায়গা করবেন?

কাজটা খুব সহজ, তবুও বেশীরভাগ পুরুষ ভুল করে। আপনার স্ত্রীর ছোট ছোট বিষয় গুরুত্বের সাথে দেখুন। স্ত্রীর মনে জায়গা করতে তাকে দামী উপহার দিতে হবে না, তার জন্য অনেক খরচ করতে হবে না। শুধুমাত্র, তাকে সময় দিন, তার ছোট ছোট পছন্দ/অপছন্দ গুরুত্ব দিন।

এর সাথে আরেকটি কাজ করলে আরো ভালো হয়। সেটা হলো – স্ত্রীর সাথে ধীরে ধীরে, একটি গোপন সম্পর্ক তৈরি করুন। সেটা কেমন? স্কুলের সহপাঠী ও অফিসের কলিগ, এদের মধ্যে গোপন সম্পর্ক থাকে। সহপাঠিরা গোপনে, স্যারকে “পেটুক” বলে। কলিগরা গোপনে বসকে “ছাগল” বলে। এমন গোপনীয়তা, বন্ধুত্বকে পোক্ত করে। আপনার স্ত্রীর সাথে, এমন একটি গোপন সম্পর্ক তৈরি করুন। পাশের বাসার মোটা আন্টির ব্যাপারে, কিছু এলোমেলো কথা বলে, নিজেরা গোপনে হাসাহাসি করুন। এভাবে শুরু হবে, এবং ধীরে ধীরে দুজনের বন্ধুত্ব বেড়ে যাবে। আপনার স্ত্রীর সমস্ত স্মৃতি জুড়ে শুধু আপনিই থাকবেন।

মুল কথা একটিই। আপনার স্ত্রীকে বেশী সময় দিন, তার খেয়াল করুন, তার সাথে সু-সম্পর্ক তৈরি করুন। তাহলে, তিনি আগের স্বামীর কথা স্মরণ করার সুযোগই পাবেন না।

Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.