কম্পিউটারে HDD ও SSD কী? দুটোর কাজ কী? দুটোই কি এক সাথে ব্যবহার করা যায়? দুটোর মধ্যে কোনটা ভালো ও নিরাপদ?

HDD- (Hard Disk Drive)। কম্পিউটার ব্যবহার করে আর এই ডিভাইসের সাথে পরিচয় নাই এমন কেউ কমই আছে। এটাকে শর্টকাটে আমরা হার্ডডিস্ক বলি এবং এটি একটি স্টোরেজ ডিভাইস। হার্ডডিস্কে ডেটা রিড এবং রাইট করার জন্য একচুয়েটর আর্ম ব্যবহার করা হয়। এটাকে মেকানিক্যাল আর্মও বলে।

হার্ডডিস্কের বড় সুবিধা হল, এর দাম তুলনামুলুক কম। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে একটু দাম বেড়েছে। 1 টেরাবাইট বা 1024 গিগাবাইট হার্ডডিস্কের দাম এখন ৩৯০০ টাকা। যেটা মাস ছয় আগেও ৩২০০ টাকা ছিল। তো চিন্তা করুন, এই এক টেরাতে আপনি কতকিছু রাখতে পারবেন। কমদামে বড় জায়গা।

দামের দিক থেকে ইনি সাশ্রয়ী হলেও এর একটা সমস্যাও রয়েছে। হ্যাঁ, এই ডিভাইসের রিড/রাইট স্পিড ধীর গতি।

SSD (Solid State Drive)। এটি হচ্ছে হার্ডডিস্কের সাথে পাল্লা দেয়া আধুনিক প্রযুক্তি, যা SSD নামক ফ্ল্যাশ মেমরি নামে পরিচিত। পেনড্রাইভে যেরকম মাইক্রোচিপের মধ্যে ডেটা সংরক্ষণ করা হয়, তেমনি SSD তেও ডেটা সংরক্ষণ করা হয়। এটি খুব দ্রুত গতিতে ডেটা প্রসেসিং করে। এটাতে কোন মুভিং পার্টস থাকে না, কিন্তু এতে থাকে ন্যান্ড ফ্ল্যাশ মেমরী বা নন-ভোলাটাইল। পাশাপাশি একটি কন্ট্রোলার ইউনিট থাকে যেটি খুব দ্রুততার সাথে ডাটা প্রসেসিং করে ঐ ন্যান্ড ফ্ল্যাশ মেমরীতে ডেটা সংরক্ষণ করে রাখে। ফলে দ্রুতগতিতে কাজ করে।


  • হার্ডডিস্কের তুলনায় এসএসডির দাম বেশি।
  • Solid State Drive ব্যবহৃত পিসিগুলা রান হতে মাত্র ১০-১৫ সেকেন্ড সময় নেয়। আর Hard Disk Drive ব্যবহৃত পিসিগুলা রান হতে প্রায় ১ মিনিট বা এর বেশি সময় নেয়।
  • Solid State Drive ব্যবহৃত পিসিগুলাতে খুব দ্রুত অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করা যায়। অপরদিকে হার্ডডিস্কে সময় বেশি লাগে।
  • ডেস্কটপের হার্ডডিস্ক দেখতে অনেক স্বাস্থ্যবান। কিন্তু এসএসডি স্লিম ও সুন্দর।
  • দুটোই একই কম্পিউটারে ব্যবহার করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে একটি মাস্টার ড্রাইভ অর্থাৎ উইন্ডোজের জন্যে, অপরটি এক্সটারনাল হার্ড-ড্রাইভ হিসেবে।

আকিকার মাসায়েল ও দোয়া

আকিকা কে করবে : যিনি সন্তানের লালন-পালন কিংবা ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করছেন, তিনিই সন্তানের আকিকা আদায় করবেন। তাই প্রথমত, এই দায়িত্ব পিতার ওপর ন্যস্ত হয় ।

পিতার সামর্থ্য না থাকলে সে ক্ষেত্রে মা সামর্থ্যবান হলে তিনি অথবা তাঁদের পক্ষ থেকে দাদা-দাদি, নানা-নানি আকিকা আদায় করবেন। (আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ : ৩০/২৭৭) অনেকের ধারণা, আকিকার জন্তু নানার বাড়ি থেকে আসতে হয়, এ ধারণা সঠিক নয় ।

আকিকার পশুর সংখ্যা : নির্ভরযোগ্য মত অনুযায়ী ছেলেসন্তানের পক্ষ থেকে একই ধরনের দুটি বকরি এবং মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরি আকিকা করা সুন্নাত। (ফাতাওয়ায়ে শামি : ৬/৩৩৬) হজরত উম্মে কুরজ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘ছেলের জন্য এক ধরনের দুটি বকরি এবং মেয়ের জন্য একটি বকরি আকিকা করবে। ’ (আবু দাউদ : ২৮৩৪) তবে ছেলের পক্ষ থেকে একটি বকরি আকিকা করলেও মুস্তাহাব আদায় হয়ে যাবে। যদিও দুটি করা উত্তম ।

(রদ্দুল মুহতার : ৫/২১৩, আল মাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ : ৩০/২৭৭)

আকিকার দিন : সাধারণ সন্তান ভূমিষ্ঠের সপ্তম দিন আকিকা করা উত্তম। তবে যদি কেউ কারণবশত সপ্তম দিন না করতে পারে, তবে পরবর্তী সময়ে যেকোনো দিন আদায় করতে পারবে। সপ্তম দিন মনে রাখার একটি সহজ পদ্ধতি হলো, সপ্তাহের যে দিনটিতে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে, যেমন—শুক্রবার, পরবর্তী সপ্তাহে ঠিক এর আগের দিন, অর্থাত্ বৃহস্পতিবার আকিকা আদায় করলে তা সপ্তম দিনে পড়বে ।
(আবু দাউদ : ২৮৩৭)

আকিকার জন্তুর ধরন : যেসব জন্তু দিয়ে কোরবানি শুদ্ধ হয় না, সেসব জন্তু দিয়ে আকিকাও শুদ্ধ হয় না। তাই আকিকার ক্ষেত্রে জন্তুর বয়স ও ধরনের দিক থেকে কোরবানির জন্তুর গুণ পাওয়া যায়, এমন জন্তুই নির্বাচন করতে হবে ।

(তিরমিযি : খ. ৪, পৃ. ১০১)

কোরবানির জন্তুর সঙ্গে আকিকা করা : কোরবানির জন্তুর সঙ্গে আকিকা করা বৈধ। একটি পশুতে তিন শরিক কোরবানি হলে সেখানে আরো দু-এক শরিক আকিকার জন্যও দেওয়া যেতে পারে। তদ্রূপ কোরবানির মতো একই পশুতে একাধিক ব্যক্তি শরিক হয়ে আকিকা আদায় করতে পারবে। (দুররুল হুক্কাম : ১/২৬৬) বড় পশু—অর্থাত্ গরু, মহিষ, উট ইত্যাদিতে ছেলের জন্য এক শরিক আকিকা দিলেও তা আদায় হয়ে যাবে ।

আকিকার পশু জবাইয়ের সময় : কোনো কোনো অঞ্চলে একটি কুপ্রথা রয়েছে যে যখন নবজাতকের মাথায় ক্ষুর বসানো হবে, ঠিক সেই মুহূর্তে পশু জবাই করতে হবে—এ ধারণা সঠিক নয়। মাথা মুণ্ডানোর আগে-পরে যেকোনো সময় আকিকার পশু জবাই করা যাবে। হজরত আতা (রহ.)-এর এক বর্ণনা মতে, আকিকার পশু জবাই করার আগে মাথা মুণ্ডিয়ে নেওয়া উত্তম ।

(আল মুকাদ্দামাতুল মুমাহ্হাদাত : ১/৪৪৯)

আকিকার গোশতের হুকুম : এটি কোরবানির গোশতের মতোই। কাঁচা ও রান্না করা উভয়টিই বণ্টন করতে পারবে। সর্বস্তরের লোক তা খেতে পারবে। এমনকি নিজের মা-বাবা, নানা-নানি, ধনী-গরিব সবাই নিশ্চিন্তে আকিকার গোশত খেতে পারবে ।

(ফাতাওয়ায়ে শামি : ৬/৩৩৬)

মৃত বাচ্চার আকিকা : যেহেতু আকিকা করা হয় বালামুসিবত দূর করার জন্য, তাই মৃত বাচ্চার পক্ষ থেকে আকিকা করা সুন্নাত নয় । (আহসানুল ফাতাওয়া : ৭/৫৩৬)

লেখা ও সম্পাদনাঃ শরিফুল ইসলাম