ছেলেদের জন্য সেরা ২০ টি ফেসওয়াস – বিবরণ ও মূল্য সহ

ভালো ফেসওয়াশ ব্যবহারে মুখের ত্বকের ধুলাবালি পরিষ্কার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ব্রণের আশংকা যেমন কমে, তেমনি ত্বক স্বাভাবিক লাবণ্যময়তা ধরে রাখে।
তাই বাইরে থেকে ফিরে একটি ভাল ফেসওয়াস দিয়ে মুখের ত্বক পরিষ্কার করা উচিত।

আসুন দেখে নেই ছেলেদের সেরা ২০ টি ফেসওয়াশ:

১। ফেয়ার এন্ড লাভলি ম্যাক্স ফেয়ারনেস ফেস ওয়াশ
Fair & Lovely Max Fairness Face Wash
দামঃ ১৮৫ টাকা
পরিমানঃ ৫০ গ্রাম
ইউভি প্রটেকশন এর সাথে ফোম এর মত ফেস ওয়াশ।
ত্বক ফর্সা করে এবং স্পট কমিয়ে আনে।
দিনে অন্তত ২ বার সমগ্র মুখ ও গলায় ব্যবহার করা।
পুরুষের শক্ত ত্বক এর জন্য রয়েছে ডিপ ক্লিন ইম্পুরিটিস(ছেলেদের ফেসওয়াস)।
দীর্ঘ সময় ফেয়ারনেস দেয়।
ত্বক তৈল মুক্ত ও মসৃণ করে রাখে (তৈলাক্ত ত্বকের)।

২। হিমালয়া ইন্টেনস অয়েল ক্লিয়ার লেমন ফেস ওয়াশ
Himalaya Intense Oil Clear Lemon Face Wash
দামঃ ১৭০ টাকা
পরিমানঃ ৫০ মিলি.
ভেষজ হারবাল দিয়ে প্রস্তুত, সাবান ব্যবহার করা হয় নি।
আলতো করে মুখ পরিষ্কার করে ও অতিরিক্ত তেল সরিয়ে ফেলে।
ইম্পুরিটিস ও পলুট্যান্টস দূর করতে সাহায্য করে।
হারবাল এবং লেবুর নির্যাশ থেকে প্রস্তুত করা হয়।

৩। হিমালয়া পাওয়ার গ্লো লিসোরাইস ফেস ওয়াশ
Himalaya Power Glow Licorice Face Wash
দামঃ ১৮০ টাকা
পরিমানঃ ৫০ মিলি.
সাবান বিহীন ফেস ওয়াশ।
আলতো করে মুখ পরিষ্কার করে ও ত্বকের মৃত কোষ গুলো নতুন করে তোলে।
একটিভ বুস্ট টেকনোলজি এর পাওয়ার।
দেয় ঠান্ডা অনুভুতি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
স্কিন এর উজ্জলতা বৃদ্ধি করে ও মৃত কোষ জীবিত করে।
ত্বক এর সঠিক যত্ন নেয়।
লাইসোরাইস, আলফালফা ও কাঠের গুঁড়ো পাউডার দিয়ে প্রস্তুত করা হয়।

৪। ভেসলিন ম্যান হোয়াটেনিং ফেস ওয়াশ
Vaseline Men Whitening Face Wash
দামঃ ১২০ টাকা
পরিমানঃ ৫০ মিলি.
ময়লা দূর করে এবং ত্বকের মৃত কোষ গুলো সরিয়ে ফেলে।
ত্বকের পুষ্টি ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করে।
ত্বকের উজ্জলতা ঠিক রাখে।
মুখ পরিষ্কার করে এবং দীপ্তিময় করে।
মুখের বিভিন্ন স্পট এর দাগ মুছে ফেলে।
এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি৩ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস।

৫। পন্ডস ম্যান এনার্জি চার্জ ফেস ওয়াশ
Pond’s Men Energy Charge Face Wash
দামঃ ১২০ টাকা
পরিমানঃ ৫০ গ্রাম
স্কিন এর সঠিক যত্ন নেয়।
মৃত কোষ কে জাগিয়ে তুলে।
তাৎক্ষণিক স্কিন পরিস্কার করে এবং উজ্জলতা বৃদ্ধি করে।
স্কিন এর জন্য দেয় শিতল অনুভূতি।

৬। পন্ড’স ম্যান অয়েল কন্ট্রোল ফেস ওয়াশ
Pond’s Men Oil Control Face Wash
দামঃ ১৪০ টাকা
পরিমানঃ ৫০ গ্রাম
স্কিন এর অতিরিক্ত তেল শোষণ করে।
সাইক্লিক এসিড এর মত কাজ করে।
মুখের বিভিন্ন দাগ ও ব্রণ এর হাত থেকে রক্ষা করে।
মুখ পরিস্কার করে।
স্কিন এর ছিদ্র ছিদ্র দাগ গুলু মুছে ফেলতে সাহায্য করে।
হাজেল নির্যাশ ও খনিজ কলের মিশ্রণে প্রস্তুত করা হয়।

৭। ছেলেদের জন্য Oxy Perfect ফেসওয়াসঃ
OXY Perfect Wash-এর দাম পরবে ৩২০ টাকা ।
১.OXY ACTIVE WITH SCRUBBING
GRANULES FACE WASH(50 GM ২১০টাকা।
২. OXY DEEP FACE WASH(50 G) ১৭০টাকা।
পরিমানঃ ৫০ গ্রাম
এটি অ্যান্টি-একনি ও ব্রণ এর দূর করার ফেস ওয়াশ।
স্কিন এর নষ্ট চামড়া ও ময়লা দূর করে।
স্কিন এর কাল দাগ গুলোর উজ্জলতা বৃদ্ধি করে।
ঘাম জনিত ময়লা দূর করে ও স্কিন এর সঠিক যত্ন নেয়।
এটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া, সুতরাং এটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
ওলেয়া ইউরোপিয়া ফলের তেল, সাল্ভিয়া অফিসিনালিস পাতা ও মেনথল ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

৮। এভারইয়ুথ ম্যানজ পলুশন ডিফেন্স ফেস ওয়াশ
Everyuth Menz Pollution Defence Face Wash
দামঃ ৮০ টাকা
পরিমানঃ ১০০ গ্রাম
স্কিন এর ছিদ্র এর ময়লা দুর করে।
উজ্জলতা বৃদ্ধি করে।
স্কিন এর তৈলাক্ত ভাব দূর করে।
পরিস্কার ও ফ্রেশ স্কিন প্রদান করে।

৯। এভারইয়ুথ ম্যানজ স্কিন ব্যালেন্সিং ফেস ওয়াশ
Everyuth Menz Skin Balancing Face Wash
দামঃ ১৬০ টাকা
পরিমানঃ ১০০ গ্রাম
জেল সমৃদ্ধ ফেস ওয়াশ
স্কিন গভীরে পরিস্কার করতে সক্ষম।
স্কিন এর কোন ক্ষতি হয় না।
সঠিক ময়েশ্চারাইজ ও রিফ্রেশড স্কিন প্রদান করে।
১০। গার্নিয়ার ম্যান ইনটেন্স ফ্রেশ ফেস ওয়াশ
Garnier Men Intense Fresh Face Wash
দামঃ ২২০ টাকা
পরিমানঃ ১০০ গ্রাম
জেল ভিত্তিক ফেস ওয়াশ।
মৃত কোষ ও চামড়া পরিস্কার করে।
স্কিন অনেক সফট করে তুলে।
স্কিন এ এক্সট্রা বুস্ট প্রয়োগ করে, এতে স্কিন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
সারাদিন স্কিন পরিস্কার ও ফ্রেশ করে রাখে।
ময়লা ও স্কিনের অন্যান্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
জিংসেন ও সবুজ চা এর মিশ্রণে এটি প্রস্তুত করা হয়।

১১। নিভিয়া এডভান্স হোয়াটেনিং ডার্ক স্পট রিডাকশন ১০ ইন ১ ফেস ওয়াশ
Nivea Advanced Whitening Dark Spot Reduction 10 in 1 Face Wash
দামঃ ২২০ টাকা
পরিমানঃ ১০০ মিলি.
মুখের দাগ দূর করে ও ব্রণ এর হাত থেকে রক্ষা করে।
স্কিন এর গভীরে পরিস্কার করে, তেল থেকে টানা ১২ ঘণ্টা সুরক্ষা দেয়।
এটি ডেরম্যাটোলজিক্যালি পরীক্ষিত।
১০ গুন বেশি ফেয়ারনেস প্রদান করে।
ত্বক কে করে মসৃণ ও উজ্জ্বল।
সকল ধরনের স্কিনের জন্য উপযোগী।

১২। গার্নিয়ার পাওয়ারলাইট ইন্টেন্সিভ ফেয়ারনেস ফেস ওয়াশ
Garnier PowerLight Intensive Fairness Face Wash
দামঃ ২৬০ টাকা
গার্ণীয়ার মেন পাওয়ারলাইট ওয়েল কন্ট্রোল ফেয়ারনেস ক্রিম রিভিউ
পরিমানঃ ১০০ গ্রাম
তেল, ময়লা ও নষ্ট চামড়া তুলে স্কিন পরিস্কার করে।
মৃত কোষে মাইক্রো-পলিশিং এর দ্বারা ক্লিন করে।
স্কিন এর উজ্জলতা বৃদ্ধি করে।
আঙ্গুর এর রস ও লেবু এর মিশ্রণে প্রস্তুত করা হয়।

১৩। ভি এল সি সি ম্যান একটিভ লাইট ফেস ওয়াশ
VLCC Men Active Light Face Wash
দামঃ ২৬০ টাকা
পরিমানঃ ১০০ মিলি.
ব্লেমিশেস এর বিরুদ্ধে ফাইট করে।
মৃত চামড়া সরিয়ে ফেলে।
মুখের ছিদ্র দূর করে।
তৈলাক্ত ভাব দূর করে।
যে কোন ধরনের স্কিন এর জন্য উপযোগী।
তুত সার ও পুদিনা পাতা এর মিশ্রণ করে প্রস্তুত করা হয়।

১৪। গার্নিয়ার ম্যান অয়েল ক্লিয়ার ডিপ ক্লিন্সিং ফেস ওয়াশ
Garnier Men Oil Clear Deep Cleansing Face Wash
দামঃ ২৮০ টাকা
পরিমানঃ ১০০ গ্রাম
খনিজ মাটি সমৃদ্ধ ফেস ওয়াশ।
সকল ময়লা থেকে স্কিন কে পরিস্কার রাখে।
স্কিন কে রাখে ফ্রেশ।
ক্রিও মেন্থল পাতা দ্বারা ঠান্ডা অনুভুতির সৃষ্টি করে।
তৈলাক্ত ভাব দূর করে।
ত্বকের প্রয়োজনীয় হাইড্রেশন প্রদান করে।

১৫। গার্নিয়ার একনো ফাইট ৬ ইন ১ পিম্পল ক্লিয়ারিং ফেস ওয়াশ
Garnier Acno Fight 6 in 1 Pimple Clearing Face Wash
দামঃ ৩২০ টাকা
পরিমানঃ ১০০ গ্রাম
ত্বকের লাল ভাব দূর করে এবং ব্রণ এর হাত থেকে রক্ষা করে।
ত্বকের ছিদ্র মুছে ফেলে।
মুখের কালো দাগ দূর করে এবং উজ্জলতা বৃদ্ধি করে।
স্কিন এর অতিরিক্ত তেল অপসারন করে।
ব্রণ প্রবণ ত্বকের জন্য এটি খুব উপকারি।
লেবু, মেনথল, গ্লিসারিন ও সিন্থেরিক ওয়াক্স এর মিশ্রণে প্রস্তুত করা হয়।

১৬। নিভিয়া এডভান্স হোয়াটেনিং অয়েল কন্ট্রোল ১০ ইন ১ ফেস ওয়াশ
Nivea Advanced Whitening Oil Control 10 in 1 Face Wash
দামঃ ৩৫০ টাকা
পরিমানঃ ১০০ গ্রাম
ত্বকের গভীরে পরিস্কার করে।
ব্যাকটেরিয়া থেকে দেয় ৯৯% সুরক্ষা।
মুখের কালো দাগ দূর করে ও উজ্জলতা বৃদ্ধি করে।
সর্বোচ্চ ১২ ঘন্টা পর্যন্ত তৈলাক্ত ভাব থেকে দূরে রাখে।

১৭। ও৩+ ম্যান টি ট্রি মেলা ড্যারম ক্লিনসিং জেল ফেস ওয়াশ
O3+ Men Tea Tree Mela Derm Cleansing Gel Face Wash
দামঃ ৩৮০ টাকা
পরিমানঃ ৫০ মিলি.
চেহারা ও স্কিন এর সঠিক যত্ন নেয়।
স্কিন এর উজ্জলতা বৃদ্ধি করে। শুষ্ক চামড়ার স্কিন এর জন্য খুব উপকারি।
ত্বকের কোন ক্ষতি না করে সর্বোচ্চ ক্লিন করে।
ত্বকের বিভিন্ন ময়লা, ব্রন এর হাত থেকে স্কিন কে পরিস্কার রাখে। মুখের ছিদ্র গুলোতে ডিপ ক্লিন করে থাকে।
চা পাতা ও এলোভেরা সমৃদ্ধ এই ফেস ওয়াশ।

১৮। অরিফ্লেম নর্থ ফর ম্যান এক্টিভ ফেয়ারনেস ফেস ওয়াশ
দামঃ ৫৮০ টাকা
পরিমানঃ ১৫০ মিলি.
শোষণ মুক্ত ফেস ওয়াশ।
স্কিন এর অতিরিক্ত তেল ও ময়লা দূর করে।
স্কিন এর ভারসাম্য ধরে রাখে।
সবসময় স্কিন কে রাখে পরিস্কার, ফ্রেশ।
আর্কটিক প্রো ডিফেন্স সমৃদ্ধ।

১৯। লোরিয়েল ম্যান এক্সপার্ট হায়েড্রা এনার্জিক স্কিন এওয়াকেনিং আইসি ক্লিনসিং জেল
দামঃ ৬২০ টাকা
পরিমানঃ ১০০ মিলি.
সতেজ ও মসৃণ ত্বক প্রদান করে।
ত্বকের ছিদ্র দূর করে।
ত্বকে প্রাকৃতিক উপাদান নিশ্চিত করে।
ত্বকের গভীরে পরিস্কার করে ও সঠিক যত্ন নেয়।
স্কিন এর ময়েশ্চারাইজ ঠিকরাখে।

২০। নিউট্রেজেনা ম্যান স্কিন ক্লিয়ারিং একনি ওয়াশ ফেস ওয়াশ
দামঃ ৯৬০ টাকা
পরিমানঃ ১৫০ মিলি.
ব্রণ ও ব্রণ জনিত দাগ দূর করে।
স্কিন এর গভীরে ক্লিন করে।
ত্বকের রুক্ষতা দূর করে।
স্কিন এর তৈলাক্ত ভাব দূর করে।
ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি ও সঠিক ফেয়ারনেস প্রদান করে।
এর মধ্যে ২% সালিসাইলিক আসিড ব্যবহার করা হয়েছে ।

রুপ চর্চা নিয়ে ছেলে/মেয়েদের যে কোনো পরামর্শ/দিকনির্দেশনা পেতে আমাদের Shariful Islam Junior পেইজটি লাইক করুন । ধন্যবাদ 💐

ত্বকের উজ্জ্বলতা কেন হারায়? বাড়ানোর কৌশল

উজ্জ্বল ও দীপ্তিময় ত্বক সবারই পছন্দ । তবে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপারই বটে। কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে কিন্তু ত্বককে সুন্দর রাখা যায় ।

প্রশ্ন : ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে করণীয় আসলেই কী?
উত্তর : আমরা আজ খুব চমৎকার একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। দর্শকের সঙ্গে সঙ্গে আমি নিজেও বেশ উচ্ছ্বসিত। দর্শকদের উদ্দেশে প্রথমে বলতে চাই, উজ্জ্বল ত্বক বলতে আমরা কী বুঝি। উজ্জ্বল ত্বক নিয়ে কিন্তু অনেক রকম দ্বিধা থাকে। উজ্জ্বল ত্বক বলতে আমরা সেই ত্বককে বলব, যেই ত্বক সুস্থ-স্বাভাবিক ও প্রাণবন্ত, যে ত্বকে পানির পরিমাণ ঠিকঠাক থাকে, সঠিক আর্দ্রতা বজায় থাকে। কারণ, আর্দ্রতা হারালে ত্বক হয়ে যাবে মলিন। আর ত্বকের যে প্রতিটি কোষ, সেগুলো যেন থাকে সুস্থ। কারণ, সুস্থ কোষই নির্দিষ্ট পরিমাণ মেলানিন তৈরি করবে। কোষগুলো যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়, তখন সে হাইপার অ্যাকটিভ হয়ে বেশি বেশি মেলানিন তৈরি করবে, যা উজ্জ্বলতার পথে বাধা দেবে।

এর পর ত্বকের একটি গভীরে থাকে তৈল গ্রন্থি। এটি সেবাম তৈরি করে, যা প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। কোনো কারণে গ্রন্থিগুলো যদি হাইপার অ্যাকটিভ হয়ে যায়, বেশি বেশি সেবাম তৈরি করে, ত্বক তখন দেখায় চকচকে। অক্সিডাইসড হয়ে যায়। আর সেবাম প্রয়োজনের তুলনায় যদি কম তৈরি করে, সে ক্ষেত্রে ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক। এর মানে সুস্থ ত্বক হলো, ভারসাম্যপূর্ণ ত্বক।
আসলে ফর্সা ত্বক যদি প্রাণহীন থাকে, সে ক্ষেত্রে কিন্তু আসল সৌন্দর্য থাকছে না ।

প্রশ্ন : ত্বকের উজ্জ্বলতা হারানোর কারণ কী?
উত্তর : উজ্জ্বলতা হারানোর কারণের ক্ষেত্রে প্রথমেই আসছে বয়স। বয়স বাড়তে থাকলে ইলাস্টিন ও কোলাজেন কিন্তু কমতে থাকে। এতে ত্বক দৃঢ়তা ও স্থিতিস্থাপকতা হারায়। এরপর কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। তখন বেশি মেলানিন তৈরি করে। এতগুলো বিষয় কিন্তু বয়সের সঙ্গে হচ্ছে। এটা স্বাভাবিক। এর সঙ্গে অনিদ্রা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, অপুষ্টিকর খাবার, এগুলো যদি যোগ করি, তাহলে বয়স বাড়ার গতিটাও বাড়বে, সঙ্গে ত্বক কিন্তু হয়ে উঠবে আরো অনুজ্জ্বল ।

প্রশ্ন : রোগীরা সাধারণত কোন ধরনের সমস্যা নিয়ে আপনাদের কাছে আসে?
উত্তর : ইদানীং আমি যে সমস্যাগুলো দেখছি, মেয়েদের মাঝে, ২০ থেকে ৪০-এ বয়সের মধ্যে, থুতনির অংশটা একটু কালো। আমি একে বলব, মিস ম্যাচ স্কিন বা আনইভেন স্কিন টোন।
আনইভেন স্কিন টোন কেন হচ্ছে? ত্বকের রঞ্জক পদার্থ মেলানিন, যেটি আমাদের বর্ণ নির্ণয় করে, সেই মেলানিন কিন্তু একটু বেশি তৈরি হয়। এ কারণেই দেখা যাচ্ছে একেক জায়গায় একেক ধরনের ত্বক। কারো হয়তো দেখা যাচ্ছে, সম্পূর্ণ শরীরের রং স্বাভাবিক, তবে মুখটি একটু বেশি কালো। মুখের ওপরই কিন্তু অত্যাচারটা বেশি হয়।
একটি ডাটায় দেখা গেছে, একজন ছেলে প্রতিদিন অন্তত ছয়টি প্রসাধনী ব্যবহার করে এবং একজন মেয়ে ১২টি প্রসাধনী ব্যবহার করে। এদের মধ্যে ৮০ ভাগ প্রসাধনী চলে আসে মুখে। এ কারণেই কিন্তু ত্বকে এত সমস্যা দেখা দেয়।
এখন যেটি বলছি যে থুতনিতে একটু কালো রং, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় অপুষ্টির অভাব। এরা হয়তো আয়রনের ঘাটতির কারণে রক্তস্বল্পতায় ভুগছে বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা হয়তো বেশি বা কম হচ্ছে। কারণ, এগুলোর কারণে কিন্তু ত্বকের টেক্সচার নষ্ট হয়ে যায় ।

এরপর ইদানীং আরেকটি বিষয় দেখছি যে অবাঞ্ছিত লোম। এ ক্ষেত্রে মেয়েদের টেসটেসটোরেন হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। অনেক সময় প্রসাধনী বেশি ব্যবহারের কারণেও অবাঞ্ছিত লোম হয়। সে ক্ষেত্রে তারা হয়তো বেশি বেশি ওয়াক্সিং, থ্রেটিং, এপিলেটর ব্যবহার করছে।
এরপর আমাদের ত্বকের যে উপরিভাগের লেয়ার, এটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক সময় কিছু কিছু অবাঞ্ছিত লোম একত্র হয়ে কালো কালো গোল গোল দাগ তৈরি করছে ।

প্রশ্ন : এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সাধারণ কী কী পদ্ধতি রয়েছে?
উত্তর : সে ক্ষেত্রে রোগীর ইতিহাস, এর সঙ্গে কাউন্সেলিং করতে হবে। তাকে বোঝাতে হবে, এ অনাকাঙ্ক্ষিত দাগ আমার হঠাৎ করে এসেছে। এটি খুব তাড়াতাড়ি চলে যাবে না। পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আয়রনের ঘাটতি জনিত রক্তস্বল্পতায় আমরা সাপ্লিমেন্ট দিই। এরপর অবাঞ্ছিত লোম থাকলে আমরা টেসটোসটেরন হরমোনকে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসি। কিছু ট্রপিক্যাল ক্রিম ব্যবহার করতে বলি। অবাঞ্ছিত চুলে সঙ্গে একটি চিকিৎসা চলেই আসে, সেটি হলো হেয়ার লেজার ।

প্রশ্ন : অনেকে অধৈর্য হয়ে পড়ে চিকিৎসা নিতে, সে ক্ষেত্রে কী করেন?
উত্তর : এ ধরনের ক্ষেত্রে আমরা কাউন্সেলিং করে থাকি । আমরা রোগীকে বোঝাতে থাকি এগুলো এত দিন ধরে হয়েছে, হঠাৎ করে যাবে না। আবার হঠাৎ করে হলেও যেতে সময় লাগবে। এই যেমন বলছি যে অবাঞ্ছিত লোমের জন্য হেয়ার রিমুভাল লেজার, এতে আপনার ২০ ভাগ করে চুল পড়ে। পাঁচটি সেশনে ১০০ ভাগ। সে ক্ষেত্রে আমরা একটি হিসাব করে থাকি।
এরপর থুতনিতে দাগের আরেকটি কারণ মেছতা। এটি কেবল থুতনিতে হয় না, গালের চিকবোন, চিবুক, হাতে, ঘাড়ে হয়। মেছতাকে আমরা খুবই প্রচলিত রোগ বলি। আমরা ডার্মাটোলোজিস্টরা এটি নিয়ে বেশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হই।
মেছতা মেয়েদের বেশি হয়। ১০ জনের মধ্যে একজন মেয়ের হয়। এর কারণ হলো, অতিবেগুনি রশ্মি। অতিবেগুনি সংস্পর্শে কিন্তু ছেলেমেয়ে সবাই আসে। যারা বাইরে কাজ করছে, তাদের হচ্ছে।
অনেকে ভাবে যে আমি তো সারা দিন ঘরেই বসে রয়েছি, আমি তো অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে আসছি না। সে ক্ষেত্রে যাঁরা রান্না করছেন, আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহার করছি। সেই ডিভাইস থেকে আলট্রাভায়োলেট রশ্মি আসে। এগুলো কিন্তু আমাদের ত্বকের মেলানিন তৈরিকে বাড়ায় ।

© ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন
বর্তমানে তিনি শিওর সেল-এর ডার্মাটোলজি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত ।
সম্পাদনা : শরিফুল ইসলাম জুনিয়র