ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত মোনাজাত ( দলিলসহ )

ফরয নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাত অস্বীকার কারীদের কতিপয় জটিল প্রশ্ন ও তার দলিলসহ
জবাব নিচে প্রশ্নোত্তর আকারে বর্ণনা করা হলো …

এক বেঁটে মহিলার গলার হার পড়ে গেলো কলসের ভিতর অতপর সে কলসে হাত দিয়ে শাশুড়িকে ডেকে বললো, আম্মা! আম্মা! কলসের তো তলা নেই। আসলে কলসের তলা আছে কিন্ত তার হাত খাটো হওয়ার কারণে কলসের তলা পায় না, এই হলো মূল বিষয় ।

আমাদের দেশের নামধারী আহলে হাদীস  শায়েখরা বিভিন্ন মাসআলায় গভীর গবেষণা না করেই এটা হাদীসে নেই,  ওটা হাদীসে নেই সুতরাং এটা বেদআত ওটা বেদআত বলে দিচ্ছে । আসল কথা হলো হাদীসে তো আছে কিন্ত তাদের গবেষণার দৌঁড় সেই পর্যন্ত পৌঁছে না। আর আমাদের কিছু ভাই অন্ধের মত
তাদের এই নতুন বাণীগুলো এক বাক্যে মেনে নিচ্ছে ।
ফরয নামাযের পর সম্মেলিত মুনাজাতকে নামধারী আহলে হাদীসরা বেদআত বলে অথচ এর পক্ষে কুরআন সুন্নাহর বহু দলিল রয়েছে কিন্ত তাদের গবেষণার দৌঁড় সেই পর্যন্ত পৌঁছেনি তাই তারা একে বেদআত বলে। ফরয নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাতের প্রমাণ নিচে প্রশ্নোত্তর আকারে দেয়া হলো।

প্রশ্নঃ নামাযের পর দুআ করা সম্পর্কে আল্লাহর নির্দেশ আছে কি ?

জবাবঃ হ্যাঁ নামাযের পর দুআ করা সম্পর্কে আল্লাহর নির্দেশ আছে,
إذا فرغت من الصلاۃ المکتوبۃ فانصب في الدعاء۰ (تفسیر ابن عباس : ۵۱۴(
হযরত ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি সূরা ইনশিরাহ তথা আলাম নাশরাহ এর সাত ও আট নাম্বার আয়াতের তাফসীরে বলেন, “যখন তুমি ফরজ নামায হতে ফারেগ হও, তখন দু‘আয় মশগুল হয়ে যাবে।” (তাফসীরে ইবনে আব্বাস রা., ৫১৪ পৃঃ)
قال ابن عباس وقتادۃ والضحاک ومقاتل والکلبي : إذا فرغت من الصلاۃ المکتوبۃ أو مطلق الصلاۃ فانصب إلی ربک والدعاء، وار غب إلیہ في المسئلۃ) تفسیرمظہري:۱/۲۹۴(
হযরত কাতাদাহ, যাহহাক ও কালবী রাঃ হতে উক্ত আয়াতের তাফসীরে বর্ণিত আছে, তাঁরা বলেন  ‘ফরজ নামায সম্পাদন করার পর আল্লাহর দরবারে দু‘আয় লিপ্ত হবে’। (তাফসীরে মাযহারী, ১০/২৯৪ পৃঃ।তাফসীরে দূররে মানসূর : ৬/৩৬৫)
عن ابن عباس عن النبي صلی اللہ علیہ وسلم إن اللہ تعالی قال : یا محمد! إذا صلیت فقل : اللہم إني أسئلک فعل الخیرات وترک المنکرات وحب المساکین۰)رواہ الترمذي : ۲/۱۵۹ الحدیث ۳۲۴۹(
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রা. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ তাআলা তাকীদ করে বলেছেন যে, হে মুহাম্মাদ! যখন আপনি নামায থেকে ফারিগ হবেন তখন এ দু‘আ করবেন, হে আল্লাহ আমি আপনার নিকট ভাল কাজের তৌফিক কামনা করছি এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে সাহায্য চাচ্ছি এবং আপনার দরবারের মিসকীন অর্থাৎ আল্লাহ ওয়ালাদের মুহাব্বত কামনা করছি….।  (তিরমিযী শরীফ : ২/১৫৯ হাঃ নং ৩২৪৯)

আল্লাহ তা’আলার এ সমস্ত নির্দেশ দ্বারা বুঝা গেল যে, ফরজ নামাযের পর ইমাম ও মুসল্লীদের জন্য দু‘আ ও মুনাজাতে মশগুল হওয়া কর্তব্য ।

প্রশ্নঃ ফরয নামাযের পর কেন হাত তুলে দু’আ করেন ?

জবাবঃ ফরয নামাযের পর দুআ কবুল হওয়ার কথা সহীহ হাদীসে আছে তাই দুআ করি ।
عن أبي أمامۃ الباہلي قال قیل یا رسول اللہ! أي الدعاء أسمع؟ قال : جوف اللیل الأخر ودبر الصلوات المکتوبۃ۰ رواہ الترمذي : ۱/۰۸۷ وکذا۰) وابن ماجۃ : ۹۳ الحدیث ۳۴۹۹(
হযরত আবু উমামা বাহেলী রা. বর্ণনা করেন যে, নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, কোন্ সময়ে দুআ করলে দুআ বেশি কবুল হয় ? তিনি বললেন, শেষ রাতে (তাহাজ্জুদের পর) এবং ফরজ নামায সমূহের পরে। ( সুনানে তিরমিযী পৃঃ ১/৮৭ হাদীস নং ৩৪৯৯)

ফরজ নামাযের পর যেহেতু দু‘আ কবুল বেশী হয়, তাই ফরজ নামাযের পর সকলের জন্য দু‘আয় মশগুল হওয়া বাঞ্ছনীয় ।

প্রশ্নঃ ফরয নামাযের পর দুআ কবুল হয় তাই আপনারা দুআ করেন ভালো কথা, কিন্তু একাএকি দুআ না করে সম্মেলিত দুআ করেন কেন ?

জবাবঃ সম্মেলিত দুআ কবুল হওয়ার গ্যারান্টি সহীহ হাদীস আছে তাই আমরা ফরয নামাযের পর সম্মেলিত দুআ করি ।
عن حبیب ابن مسلمۃ ۔۔۔ قال سمعت رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم یقول : لا یجتمع ملأفیدعو بعضہم ویؤمن البعض إلا أجابہم اللہ ۔۔۔ رواہ الحاکم فی مستدرکہ : ۳/۳۴۷  الحدیث ۵۴۷۸
হযরত হাবীব ইবনে মাসলামা রা. বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, “যদি কিছু সংখ্যক লোক একত্রিত হয়ে এভাবে দু‘আ করে যে, তাদের একজন দু‘আ করতে থাকে, আর অপররা ‘আমীন’ ‘আমীন’ বলতে থাকে, তাহলে আল্লাহ তা’আলা তাদের দু‘আ অবশ্যই কবুল করে থাকেন।’ (তালখীসুয যাহাবী, ৩:৩৪৭ পৃঃ, মুস্তাদরাকে হাকেম : হাদীস নং ৫৪৭৮)

একজন দু‘আ করবে আর অন্যরা সবাই আমীন বলবে এভাবে সকলের দু‘আ বা ‘সম্মিলিত মুনাজাত’ কবুল হওয়া অবশ্যম্ভাবী। যা উল্লেখিত হাদীস দ্বারা জানতে পারলাম ।

প্রশ্নঃ রাসূল সাঃ কি নামায শেষে দুআ করতেন ?

জবাবঃ হ্যাঁ রাসূল সাঃ নামায শেষে দুআ করতেন ।
عن المغیرۃ بن شعبۃ رضي اللہ عنہ کان النبي صلی اللہ علیہ وسلم یدعو في دبر صلاتہ ) التاریخ الکبیر : ۶(
হযরত মুগীরা বিন শু’বা রাঃ বর্ণনা করেন যে, নবী (সাঃ) স্বীয় নামাযের শেষে দু‘আ করতেন। সূত্রঃ ( ইমাম বুখারী (রহ) তারীখে কাবীরঃ ৬/৮০ )

নবী (সাঃ) যেহেতু নামাযের পর দুআ করতেন তাহলে সাহাবাগণও সাথে দুআ করতেন। কারণ নবী সাঃ দুআ করবেন আর সাহাবাগণ তার বিরুদ্ধাচরণ করবেন, এমন হতে পারে না।

প্রশ্নঃ বুঝলাম রাসূল সাঃ নামায শেষে দুআ করতেন কিন্তু হাত তুলে দুআ করতেন কী ?

জবাবঃ হ্যাঁ রাসূল সাঃ যখন দুআ করতেন তখন হাত তুলে দুআ করতেন ।
عن أبي موسی الأشعري أنہ قال : دعا النبي صلی اللہ علیہ وسلم ثم رفع یدیہ ورأیت بیاض إبطیہ۰ رواہ البخاري : ۲/۹۳۸ الحدیث
হযরত আবু মূসা আশআরী রা. বলেন, রাসূল সাঃ দু‘আর জন্য উভয় হাত উত্তোলন করেন। যদ্দরুন আমি তাঁর বগলের সাদা অংশ দেখতে পাই। ( সহীহ বুখারী হাদীস নং ৬৩৪১)

عن السائب بن یزید عن أبیہ أن النبي صلی اللہ علہ وسلم کان إدا دعا فرفع یدیہ مسح وجہہ بیدیہ۰ (رواہ أبو داود : ۱/۲۰۹الحدیث ۱۴۹۲(
হযরত সায়িব বিন ইয়াযীদ রা. স্বীয় পিতা থেকে বর্ণনা করেন নবী (সাঃ) যখন দু‘আ করতেন তখন উভয় হাত উঠাতেন এবং দু‘আ শেষে হস্তদ্বয়কে চেহারায় মুছতেন। (আবু দাউদ শরীফ ১/২০৯ হাঃ নং ১৪৯২)

প্রশ্নঃ রাসূল সাঃ কি ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করেছেন ?

জবাবঃ হ্যাঁ রাসূল সাঃ ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করেছেন ।
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي يَحْيَى، قَالَ: رَأَيْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ وَرَأَى رَجُلًا رَافِعًا يَدَيْهِ بِدَعَوَاتٍ قَبْلَ أَنْ يَفْرُغَ مِنْ صَلَاتِهِ، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْهَا، قَالَ: «إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَكُنْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ صَلَاتِهِ
হযরত মুহাম্মদ বিন আবী ইয়াহইয়া বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ বিন জুবায়ের রাঃ কে দেখেছি। তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন নামাযের ভিতরে হাত তুলে দুআ করছেন। যখন লোকটি নামায শেষ করল। তখন তিনি তাকে বললেন, নিশ্চয় রাসূল সাঃ নামায শেষ করার আগে হাত তুলে দুআ করতেন না। ( অর্থাৎ নামায শেষ করে হাত তুলে দুআ করতেন ) {আলমুজামুল কাবীর লিততাবরানী, হাদীস নং৩২৪}
حدثنا محمد بن یحي الأسلمي قال : رأیت عبد اللہ بن الزبیر ورأي رجلا رافعا یدیہ یدعو قبل أن یفرغ من صلاتہ فلما فرغ منہ۰ قال لہ إن رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم لم یکن یرفع یدیہ حتی یفرغ من صلاتہ ۰۰۰ (إعلاء السنن : ۳/۱۶۱(
হযরত মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াহইয়া রহ. বলেন, ‘আমি আব্দুল্লাহ বিন যুবাইর রা. কে দেখেছি যে, তিনি এক ব্যক্তিকে সালাম ফিরানোর পূর্বে হাত তুলে মুনাজাত করতে দেখে তার নামায শেষ হওয়ার পর তাকে ডেকে বললেন, ‘রাসূল সাঃ কেবল নামায শেষ করার পরই হস্তদ্বয় উত্তোলন করে মুনাজাত করতেন; আগে নয়।’ (ই’লাউস সুনান, ৩/১৬১)

নামাযের পর হাত তুলে দু‘আ করা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ আমল। রাসূল সাঃ স্বয়ং নামাযের পর দু‘আয় হাত উঠাতেন এবং মুনাজাত শেষে উভয় হাত চেহারার মধ্যে মুছতেন । সুতরাং এটাই দু‘আর আদব। আর এটা তো হতেই পারে না যে, নবী কারীম সাঃ নামাযের পর হাত তুলতেন কিন্তু সাহাবাগণ রাসূল সাঃ এর বিরোধিতা করে হাত তুলতেন না।

প্রশ্নঃ বুঝলাম রাসূল সাঃ ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করেছেন, কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো রাসূল সাঃ কখনো সম্মেলিত দুআ করেছেন কি ?

জবাবঃ হ্যাঁ রাসূল সাঃ সম্মেলিত দু’আ করেছেন ।

أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ: أَتَى رَجُلٌ أَعْرَابِيٌّ مِنْ أَهْلِ البَدْوِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الجُمُعَةِ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلَكَتِ المَاشِيَةُ، هَلَكَ العِيَالُ هَلَكَ النَّاسُ، «فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ، يَدْعُو، وَرَفَعَ النَّاسُ أَيْدِيَهُمْ مَعَهُ يَدْعُونَ»
হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা একজন গ্রাম্য সাহাবী রাসূল সাঃ এর কাছে আসলেন জুমআর দিন। এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! জিনিস পত্র, পরিবার, মানুষ সবই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। একথা শুনে রাসূল সাঃ তার উভয় হাত উত্তলোন করলেন দুআর উদ্দেশ্যে। উপস্থিত সবাই রাসূল সাঃ এর সাথে দুআর জন্য হাত উত্তোলন করলেন।  {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১০২৯}

প্রশ্নঃ সাহাবায়ে কেরাম সম্মেলিত দুআ করেছেন কি?

জবাবঃ হ্যাঁ সাহাবায়ে কেরাম সম্মেলিত দুআ করেছেন

عَنْ حَبِيبِ بْنِ مَسْلَمَةَ الْفِهْرِيِّ – وَكَانَ مُسْتَجَابًا -: أَنَّهُ أُمِّرَ عَلَى جَيْشٍ فَدَرِبَ الدُّرُوبِ، فَلَمَّا لَقِيَ الْعَدُوَّ قَالَ لِلنَّاسِ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – يَقُولُ: ” «لَا يَجْتَمِعُ مَلَأٌ فَيَدْعُو بَعْضُهُمْ وَيُؤَمِّنُ سَائِرُهُمْ، إِلَّا أَجَابَهُمُ اللَّهُ» “.
ثُمَّ إِنَّهُ حَمِدَ اللَّهَ، وَأَثْنَى عَلَيْهِ، وَقَالَ: اللَّهُمَّ احْقِنْ دِمَاءَنَا، وَاجْعَ أُجُورَنَا أُجُورَ الشُّهَدَاءِ،
رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ وَقَالَ: الْهَنْبَاطُ بِالرُّومِيَّةِ: صَاحِبُ الْجَيْشِ. وَرِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِ غَيْرَ ابْنِ لَهِيعَةَ، وَهُوَ حَسَنُ الْحَدِيثِ.
হযরত হাবীব বিন মাসলামা আলফিহরী রাঃ। যিনি মুস্তাজাবুদ দাওয়া ছিলেন। তাকে একবার একটি বাহিনী প্রধান নিযুক্ত করা হয়। যুদ্ধের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের পর তিনি যখন শত্রুর সম্মুখীন হলেন। তখন লোকদের বললেন, আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন “যখনি কোন দল একত্র হয়, তারপর তাদের কতক দুআ করে, আর অপরদল আমীন বলে তখন আল্লাহ তাআলা তা কবুল করে নেন”।

এ হাদীস বলার পর তিনি [হাবীব বিন মাসলামা রাঃ] হামদ ও সানা পড়লেন। তারপর বললেন, হে আল্লাহ! তুমি আমাদের প্রাণ রক্ষা কর। আর আমাদের শহীদের সওয়াব দান কর। {মাযমাউজ যাওয়ায়েদ, হাদীস নং-১৭৩৪৭, মুস্তাতাদরাক আলাস সহীহাইন, হাদীস নং-৫৪৭৮, আলমুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৩৫৩৬}

আল্লামা হায়ছামী রহঃ বলেন, উক্ত হাদীসের সূত্রের প্রতিটি রাবী সহীহের রাবী। ইবনে লাহিয়াহ ছাড়া। কিন্তু সেও হাসান পর্যায়ের রাবী। {মাযমাউয যাওয়ায়েদ-১৭৩৪৭}

প্রশ্নঃ সাহাবায়ে কেরাম ফরয নামাযের পর হাত তুলে সম্মেলিত দুআ করেছেন কি ?

জবাবঃ হ্যাঁ সাহাবায়ে কেরাম ফরয নামাযের পর হাত তুলে সম্মেলিত দুআ করেছেন।
فلما قضا الصلاة جثا على ركبتيه وجثا الناس، ونصب في الدعاء ورفع يديه وفعل الناس مثله …
এই হাদীসটি আলবিদায়া ওয়াননিহায়া গ্রন্থে আল্লামা ইবনে কাসীর রহঃ সনদসহ বর্ণনা করেছেন।
যার সারমর্ম হল,আলা বিন হাযরামী রাঃ। মুস্তাজাবুদ দাওয়া সাহাবী ছিলেন। একদা বাহরাইনের জিহাদ থেকে ফেরার পথে এক স্থানে যাত্রা বিরতি করলে খাবার দাবার ও তাবুর রসদসহ উটগুলো পালিয়ে যায়। তখন গভীর রাত সবাই পেরেশান। ফজরের সময় হয়ে গেলে আজান হল। সবাই নামায আদায় করলেন। নামায শেষে আলা বিন হাযরামী রাঃ সহ সবাই হাত তুলে সূর্য উদিত হয়ে সূর্যের কিরণ গায়ে লাগা পর্যন্ত দ্বীর্ঘ সময় দুআ করতে থাকেন।
সূত্রঃ ( আল বিদায়া ওয়াননিহায়া-৬/৩২৮-৩২৯ 
তারীখে তাবারী ২/৫২৩ ) 

প্রশ্নঃ রাসূল সাঃ সর্বদা পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করেছেন কি ?

জবাবঃ না রাসূল সাঃ সর্বদা পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করেননি।

প্রশ্নঃ রাসূল সাঃ যেহেতু ফরয নামাযের পর সর্বদা হাত তুলে দুআ করেননি তাহলে আমরা করবো কেন ?

জবাবঃ রাসূল সাঃ যদি সর্বদা ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করতেন তাহলে উম্মতের জন্য এটা ফরয হয়ে যেত তাই হয়ত রাসূল সাঃ সর্বদা ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করেননি । কিন্তু উম্মত সর্বদা ফরয নামাযের পর হাত তুলে দুআ করলে বিশেষ ফজিলতের অধিকারী হবে, এবং দুআ ফরযও হবে না তাই মুস্তাহাব হিসেবে সর্বদা করা যেতে পারে, আর এ কথা সবারই জানা,  যে কোন নফল আমল নিয়মিত করা প্রশংসার দাবিদার ।

প্রশ্নঃ যে কোন মুস্তাহাব বা নফল আমল তখন সর্বদা করা প্রশংসারযোগ্য যখন তা জরুরী মনে না করা হয়। কিন্তু আমরা দেখি অনেকেই ফরয নামাযের পর হাত তুলে সম্মেলিত দুআ করাকে জরুরী মনে করে, তাই ফরয নামাযের পর সম্মেলিত দুআ করা থেকে সবার বিরত থাকা উচিত নয় কি ?

জবাবঃ কোন ব্যক্তি বা গোষ্টীর ভুল ধারণার কারণে একটি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত আমলকে পরিত্যাগ করা বুদ্ধিমানের কাজ নয় বরং ইসলামকে ধ্বংস করার নামান্তর । সুতরাং কেউ যদি ফরয নামাযের পর হাত তুলে সম্মেলিত দুআকে জরুরী মনে করে তাহলে তাকে বুঝানো উচিত কিন্তু এই বাহানায় আমলটি ছেড়ে দেয়া উচিত নয় । মনে করুন কোন ব্যক্তি নামাযে হাত তুলা এই সুন্নত আমলকে জরুরী মনে করে তাই বলে কি আপনি এই আমলটি ‌নামাযে ছেড়ে দেয়ার কথা বলবেন ? নাকি তাকে বুঝানোর চেষ্টা করবেন ? নিশ্চয় তাকে বুঝানোর চেষ্টা করবেন,তাহলে দুআর ক্ষেত্রে ছেড়ে দেয়ার কথা বলেন কেন ?

প্রশ্নঃ বুঝলাম ফরয নামাযের পর দুআ করা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, তাহলে সৌদি আরবে ফরয নামাযের পর দুআ করে না কেন ?

জবাবঃ একটি কথা খুব ভাল করে মনে রাখতে হবে
কোন দেশ বা গোষ্টী মুসলমানদের দলিল নয় । বরং মুসলমানদের দলিল হলো কুরআন ও সহীহ হাদীস, সুতরাং কোন আমল কুরআন বা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হলেই যথেষ্ট চাই কোন দেশ বা গোষ্টীতে থাকুক বা না থাকুক । দাঁড়ি রাখার কথা, বিভিন্ন নামাযের আগে পরে সুন্নত নামাযের কথা, সম্মেলিত মুনাজাতের কথা, শবে বরাতের কথা ইত্যাদি সহীহ হাদীসে আছে কিন্তু আরব দেশে এই আমলগুলো নেই বললেই চলে। এখন আপনিই বলুন আরব দেশে নেই বলে কি আপনি আমলগুলো করবেন না ? বড় কথা হলো ফরয নামাযের পর দুআ করা একটি নফল আমল তাই কোন দেশের মানুষ না করলে তার জন্য তাদের তিরস্কার করা যাবে না । কারণ নফল আমল করলে সওয়াব আছে না করলে গোনাহ নেই, তাই যার ইচ্ছা আমল করতেও পারে আবার ছেড়েও দিতে পারে

প্রশ্নঃ হাটহাজারী মাদরাসায় ফরয নামাযের পর দুআ করা হয় না কেন ? 

জবাবঃ সেই এলাকার মানুষেরা
১-ফরজ নামাযের পর দুআকে জরুরী মনে করে ।
২-দুআকে নামাযের অংশ মনে করে।
৩-দুআ ছাড়া নামায পূর্ণ হয় না আকিদা রাখে।

তাই হাটহাজারী মাদরাসায় ফরয নামাযের পর দুআ করা হয় না,  যাতে করে জন সাধারণের মধ্য থেকে উল্লেখিত ভুল ধারণাগুলো দূর হয়ে যায় ।

প্রশ্নঃ আপনারা হাত তুলে দুআ করেন কেন ?

জবাবঃ হাত তুলে দুআ করলে আল্লাহ তার বান্দার হাত খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না তাই আমরা হাত তুলে দুআ করি ।
عن سلمان رض قال قال رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم : إن ربکم حي کریم یستحي أن یرفع العبد یدیہ فیردہما صفرا۰)رواہ أبو داؤد عن سلمان ۱/۷۰۹ برقم ۱۴۸۸(
হযরত সালমান ফারসী রাঃ থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাঃ বলেন নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভু চিরঞ্জিব এবং মহানদাতা। কোন বান্দা তার হাত দুটি উঠিয়ে দুআ করলে তার হাত খালি অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জাবোধ করেন।

( সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১৪৮৮ )

প্রশ্নঃ ফরয নামাযের পর দুআ মুস্তাহাব হয়ে থাকলে, প্রচুর হাদীসে এ ব্যাপারে রাসূল সাঃ হতে আমল প্রমাণিত থাকতো অথচ এ ব্যাপারে অল্প সংখ্যক আমলী বর্ণনা প্রমাণিত কেন ?

জওয়াবঃ ফরয নামাযের পর দুআর ব্যাপারে ‘রাসূল সাঃ থেকে অল্প সংখ্যক আমলী বর্ণনা প্রমাণিত এ কথাটি সম্পূর্ণ ভুল। কারণ এ প্রসঙ্গে অনেকগুলো স্পষ্ট হাদীস আমরা পূর্বে বর্ণনা করেছি। দ্বিতীয়তঃ মুস্তাহাব আমল প্রমাণের জন্য রাসূল ﷺ-এর কওলী বা মৌখিক হাদীস যথেষ্ট, নবী কারীম ﷺ-এর আমল এর মাধ্যমে প্রমাণিত হওয়া মোটেই জরুরী নয়। কারণ-বহু মুস্তাহাব আমল এমন রয়েছে, যা রাসূল সাঃ বিশেষ হিকমতের কারণে বা সুযোগের অভাবে নিজে করতেন না, কিন্তু সে সবের প্রতি মৌখিকভাবে উম্মতদেরকে উৎসাহ দিতেন। যাতে উম্মত তা আমল করে নিতে পারে। যেমন তাহিয়্যাতুল মসজিদ নামায, চাশতের নামায, আযান দেয়া যাকে আফজালুল আ’মাল বলা হয়ে থাকে ইত্যাদি। এগুলো রাসূলে থেকে আমল করার মাধ্যমে প্রমাণিত নেই অথচ তিনি এসব নেক কাজসমূহের প্রতি উম্মতকে মৌখিকভাবে যথেষ্ট উৎসাহিত করে গিয়েছেন। সকল উলামায়ে কেরাম এগুলোকে মুস্তাহাব আমল হিসাবে গ্রহণ করেছেন। তদ্রূপ মুনাজাতের ব্যাপারে রাসূল সাঃ হতে আমলী রিওয়ায়াত স্বল্প বর্ণিত হলেও মৌখিক রিওয়ায়াত প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান। অতএব, মুস্তাহাব প্রমাণ হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট।

প্রশ্নঃ ফরয নামাযের পর মুনাজাতের স্বপক্ষে হাদীস বিশারদগণের মতামত আছে কি ?

জবাবঃ হ্যাঁ ফরয নামাযের পর মুনাজাতের স্বপক্ষে হাদীস বিশারদগণের মতামত আছে ।
ومن فوائد الحدیث ۔۔۔ منہا : فضل الذکر عقیب الصلاۃ بأنہا أوقات فاضلۃ ترجی منہا إجابۃ الدعاء (عمدۃ القاري : ۴/۶۱۳(
১। প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাদাতা আল্লামা বদরুদ্দীন ’আইনী রহ. বলেন,“এ হাদীস দ্বারা নামাযের পরে মুনাজাত করা মুস্তাহাব বুঝা যায়। কারণ-সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐ সময় দু‘আ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।” (উমদাতুল ক্বারী ৬:১৩৯ পৃঃ)
قد ذکرنا استحباب الذکر والدعاء للإمام والمأموم والمنفرد وہو مستحب عقب کل الصلوات بلا خلاف۔۔۔ ۰ (شرح المہذب للنووي : ۳/۴۶۹(
২। মুসলিম শরীফের প্রসিদ্ধ ব্যাখ্যাকার আল্লামা নববী রহ. বলেন, “সকল ফরজ নামাযের পরে ইমাম, মুক্তাদী ও মুনফারিদের জন্য দু‘আ করা মুস্তাহাব। এ ব্যাপারে কোন দ্বিমত নেই।” (শারহে মুহাযযাব লিন-নাওওয়াবী ৩:৪৬৯)
فہذہ وما شاکلہا من الروایات في الباب تکاد تکفي حجۃ لما اعتادہ الناس فی البلاد من الدعوات الاجتماعیۃ دبر الصلوات۰۰۰(معارف السنن : ۳/۱۲۳(
৩। সুপ্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস হযরত মাওলানা ইউসুফ বিন্‌নূরী রহ. মুনাজাত সম্পর্কিত হাদীসসমূহ উল্লেখ পূর্বক বলেন, “মুনাজাত অধ্যায়ে যে সকল হাদীস পেশ করা হল, এগুলোই যথেষ্ট প্রমাণ যে, ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাত জায়েয। এ হাদীস সমূহের ভিত্তিতেই আমাদের ফুক্বাহায়ে কেরাম উক্ত মুনাজাতকে মুস্তাহাব বলেছেন। (মা’আরিফুস সুনান : ৩:১২৩ পৃঃ)

প্রশ্নঃ হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা. সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তিনি ফরজ নামাযের পর যখন সালাম ফিরাতেন, তখন এত তাড়াতাড়ি উঠে পড়তেন যে, মনে হতো তিনি যেন উত্তপ্ত পাথরের ওপর উপবিষ্ট ছিলেন। (উমদাতুল কারী, ৬:১৩৯ পৃঃ)

এর দ্বারা কি প্রমাণিত হয় না হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাঃ সালাম ফিরিয়ে মুনাজাত না করেই দাঁড়িয়ে যেতেন ?

জওয়াবঃ হযরত আবু বকর সিদ্দীক রা.-এর উল্লেখিত আমলের এ অর্থ নয় যে, তিনি সালাম ফিরানোর পর মাসনূন দু‘আ-যিকির না করেই দাঁড়িয়ে যেতেন। কেননা-তিনি রাসূল সাঃ এর বিরুদ্ধাচরণ কখনও করতে পারেন না। রাসূল সাঃ হতে সালাম ফিরানোর পর দু‘আ যিকিরের কথা প্রচুর হাদীসে বর্ণিত আছে। সুতরাং রিওয়ায়াতটির সঠিক মর্ম হল-হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাঃ সালাম ফিরানোর পর সংক্ষিপ্ত দু‘আ-যিকির পাঠের জন্য অধিক সময় বসে থাকতেন না। অতএব, উল্লেখিত রিওয়ায়াত দ্বারা হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাঃ এর মুনাজাত করা ব্যতীত উঠে পড়া প্রমাণিত হয় না। (আল আবওয়াব ওয়াত তারাজিম, ৯৭ পৃঃ)

যারা ফরজ নামাযের পরে সর্বাবস্থায় সম্মেলিত মুনাজাতের বিরোধী, তারা হযরত আবু বকর রাঃ এর আমলের ভুল অজুহাত দেখিয়ে সালাম ফিরানোর পর দেরী না করেই সুন্নত ইত্যাদির জন্য উঠে পড়েন।  অথচ এর দ্বারা নামাযের পর যে মাসনূন দু‘আ ইত্যাদি রয়েছে, তা তরক করা হয়। দ্বিতীয়তঃ ফরজ ও সুন্নাতের মাঝখানে কিছু সময়ের ব্যবধান করার যে হুকুম হাদীস  শরীফে পাওয়া যায়, তাও  লঙ্ঘন করা হয়। তাদের জন্য নিম্মোক্ত হাদীসটি বিশেষ ভাবে প্রণিধানযোগ্যঃ

হাদীসঃ আবু রিমছা রা. বর্ণনা করেন, একদা আমি নবী কারীম সাঃ এর সাথে নামায পড়ছিলাম। হযরত আবু বকর ও উমর রা. ঐ নামাযে উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রথম সারিতে নবী সাঃ এর ডান পার্শ্বে দাঁড়িয়ে থাকতেন। আমাদের সাথে এক ব্যক্তি ছিল, যে উক্ত নামাযে তাকবীরে উলা হতেই উপস্থিত ছিল। (অর্থাৎ সে মাসবুক ছিল না) নবী সাঃ নামায শেষ করে সালাম ফিরালেন এমনভাবে যে, উভয় দিকে আমরা তাঁর গন্ডদ্বয় দেখতে পেলাম। অতঃপর নবী সাঃ ঘুরে বসলেন। তখন ঐ তাকবীরে উলায় উপস্থিত ব্যক্তি দাঁড়িয়ে পড়ল সুন্নাত নামায পড়ার জন্য। তৎক্ষণাৎ হযরত উমর রা. লাফিয়ে উঠলেন এবং ঐ ব্যক্তির উভয় কাঁধ ধরে ঝাঁকুনি দিয়ে বললেন-“বসে পড়! পূর্ববর্তী কিতাবধারীদের (ধর্মীয়) পতন হয়েছে, যখন তারা (ফরজ ও সুন্নাত) নামাযের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করত না।” নবী সাঃ হযরত উমর রাঃ এর এ কাজ দেখে দৃষ্টি উঠালেন এবং বললেন, “হে খাত্তাবের পুত্র! আল্লাহ তোমাকে সঠিক পন্থী বানিয়েছেন।”
সূত্রঃ ( সুনানে আবু দাউদ হাদীস নং ১০০৫ )

প্রশ্নঃ ফরয নামাযের পরে দুআ করা যেহেতু মুস্তাহাব তাই মাঝে মধ্যে ছেড়ে দেয়া উচিত নয় কি ? যাতে করে মানুষ বুঝতে পারে দুআ করা মুস্তাহাব ???

জবাবঃ মুস্তাহাব প্রমাণের জন্য মাঝে মধ্যে তরক করার কোন আবশ্যকীয়তা নেই। যেমন-সকল ইমামই টুপি পরে, জামা পরে নামায পড়ান। কেউ একথা বলেন না যে, মাঝে মধ্যে টুপি ছাড়া জামা ছাড়া নামায পড়ানো উচিত-যাতে মুসল্লীগণ বুঝতে পারেন যে টুপি পরা বা জামা পরা ফরজ-ওয়াজিব আমল নয়। তাহলে মুস্তাহাব প্রমাণের জন্য দুআকে কেন ছাড়া হবে? অতএব মাঝে মধ্যে মুনাজাত তরক করে নয়, বরং ওয়াজ-নসীহতের মাধ্যমেই মুনাজাত মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারটি বুঝিয়ে দেয়া যুক্তিযুক্ত। এটাই অদ্ভুত পরিস্থিতির উত্তম সমাধান ।

শেষ কথা: 
উল্লেখিত সকল জবাবের দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হল যে, নামাযের পর ইমাম-মুক্তাদী সকলের জন্য ওয়াজিব মনে না করে সম্মিলিতভাবে দুআ করা মুস্তাহাব।  এ দুআকে বেদআত বলার কোন যুক্তি নেই। কারণ-বেদআত বলা হয় সেই আমলকে, শরীয়তে যার কোনই অস্তিত্ব নেই। আর দু’আ সেই ধরনের মূল্যহীন কোন আমল নয়।  তবে যেহেতু দুআ ‘মুস্তাহাব আমল’,  তাই এটাকে জরুরী বা ওয়াজিব মনে করা এবং এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করা অনুচিত। কেননা মুস্তাহাব নিয়ে বাড়াবাড়ি করা নিষিদ্ধ।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে উল্লেখিত সকল কথাগুলো মেনে চলার তাওফীক দান করুন আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন ।

আরো ইসলামী লেখা পেতে আমাদের Islamic Knowledge 💖 গ্রুপে জয়েন করুন । ধন্যবাদ 💐

লেখা ও সম্পাদনাঃ হাফেজ মোঃ শরিফুল ইসলাম

ছাত্র ℹ️ পুষ্পপাড়া কামিল মাদ্রাসা, পাবনা ।

[ফাজিল স্নাতক •  প্রথম বর্ষ ( ২০২০) ] 

5 thoughts on “ফরজ নামাজের পর সম্মিলিত মোনাজাত ( দলিলসহ )

  1. মাওলানা আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) বলেন , ফরয সালাতের পর ইমাম সাহেব দু’আ করবেন এবং মুক্তাদীগণ আ-মীন আ-মীন বলবেন , এ সম্পর্কে ইমাম আরফাহ এবং ইমাম গারবহিনী বলেন , এ দু’আকে সুন্নাত অথবা মুস্তহাব মনে করা না জায়েজ ।
    (ইস্তিহবাবুদ দাওয়াহ পৃঃ৮)

    Like

    1. ভাই, আপনি আমাকে বলদ বলার আগে সম্পূর্ন পোস্ট টি পড়ে নেওয়া উচিত ছিল ।
      এখন তো দেখছি বলদ আমি না, বরং আপনি …

      Like

Leave a comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.